‘মিউ মিউ- ম্যাও ম্যাও’

     – হরবিলাস সরকার

সে এক আজব রূপকথার দেশ । সমাজসেবী রাণীমার টানাটানির সংসার । হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি । ভাগ্যের খেলায় রাণীমা ভোটে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী হয়ে গেলেন । সবচেয়ে বড় দায়িত্ব তাঁর । ব্যস্ত জীবন । তবু একটু অবসরে মুক্ত বাতায়নে বসে বেড়ালের সাথে বন্ধুত্ব করার বড় ইচ্ছে । বেড়ালশাবক আনাও হলো । কিন্তু সমস্যা হল – পোষ্যটি বড় হয়ে ‘ম্যাও ম্যাও’ বলে ডাকতে লাগল । না: রানীমায়ের এটা পছন্দ নয়, সে ‘মিউ মিউ’ ডাক শুনতে চায় । পোষ্যকে তাই প্রতিদিন দুধে – ভাতে খুশি করে । কিন্তু ‘ম্যাও ম্যাও’ ডাক আর ছাড়ে না । রানীমা লাঠি ধরে হাতে । ‘তোকে ভালোমন্দ এত খাওয়াচ্ছি তবু তুই আমার কথা শুনছিস না ! লক্ষ্মীছাড়া, এবার তোকে দেশছাড়া করবো । বেড়াল ‘ম্যাও ম্যাও’ করতে করতে ছুটে পালায় । খানিক বাদে ফিরে এসে আবার ‘ম্যাও ম্যাও’ করে ডাকতে থাকে । এভাবে চলতে থাকলে রানীমা অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেন । এ ঘটনা বেশ জানাজানি হয়ে গেল । এলাকার কটা বিচ্ছু ছোকরা এসে জুটল । সকাল-দুপুর-বিকেল-সন্ধ্যায় ঘরের কোণে এসে তারাও ‘ম্যাও ম্যাও’ বলে ডাকতে শুরু করে । রানীমায়ের হাজার কাজের চাপে এমনিতেই মাথা গরম,তারউপর এমন আওয়াজে মাথা আরও গরম হয়ে ওঠে । লাঠি হাতে তেড়ে যান, ছোকরারা লুকিয়ে পড়ে । এদিকে বেড়ালও ‘ম্যাও ম্যাও’ করতে থাকে । লাঠি হাতে তেড়ে আসেন । বেড়াল লুকিয়ে পড়ে । এরপর একে একে আরো বিচ্ছু জুটতে লাগলো । ক্রমে চারদিক থেকেই এখন ‘ম্যাও ম্যাও’ ডাক আর ‘ম্যাও ম্যাও’ডাক । রানীমা জরুরী বৈঠক বসালেন । আইন পাস হলো । “এই ‘ম্যাও ম্যাও’- দের দেশ থেকে তাড়াতে হবে । শুধুই শোনা যাবে ‘মিউ মিউ’ ডাক । তা না হলে বড় বিপদ ।