Chorer Puroskar Prapti – চোরের পুরস্কার প্রাপ্তি

(ছোটগল্প – রম্য রচনা)

চোরের পুরস্কার প্রাপ্তি

– হরবিলাস সরকার
হরিচরণ মণ্ডলের একমাত্র মেয়ে ফুলকুমারী। দেখতে ফুলেরই মতো। পাপড়ির মতোই তার এলোকেশী চুলে রূপের ছটা। তাই আদর করে বাড়িতে সবাই ‘ফুল’ বলেই ডাকে।
এ বছরেই আঠারোর গণ্ডি পেরিয়ে সে কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছে। পড়শি গ্রামের ছেলে পাঁচুও একই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। প্রথম দর্শনেই ভাললাগা,তারপর দূর থেকেই ভালোবাসা। কিন্তু ফুল যে এত লজ্জাবতী, সরলমনা আর পাঁচু এত নরম, ভীতু মনের ছেলে যে, দুজনের মধ্যে কখনও সাক্ষাতে আলাপ হয়নি।
কলেজের বন্ধুরা এখন পাঁচুকে ‘পচা’ বলে ডাকে। পচা নামের পেছনে অবশ্য একটি কাহিনি আছে। একবার ক্যান্টিনে বন্ধুরা পাঁচুর কাছে ডিম সেদ্ধ খেতে চেয়েছিল। কৃপণ পাঁচুর পকেট গড়ের মাঠ। একটা বুদ্ধি খাটালো – কী করে এই আবদার বানচাল করা যায়। ডিম ভর্তি বাক্সের কাছে নাক নিয়ে গিয়ে গন্ধ শুঁকে অদ্ভুত ভঙ্গিমায় বলে উঠল, “বিশ্রী,পচা গন্ধ!” ইচ্ছে সত্ত্বেও সবাই তখন নিজেরাই ডিম খাওয়া থেকে বিরত রইল। কিন্তু সেই থেকেই পাঁচু হয়ে গেল পচা।
পচার একটা বৈশিষ্ট্য আছে। কারও দিকে তাকালে তার বাঁ চোখের পাতাটা আপনা থেকেই ওঠা-নামা করে। ফুলকুমারী একদিন কলেজে ঢুকছে। দূর থেকে তাকিয়ে আছে পচা। চোখের পাতাটা সমানে ওঠা-নামা করছে। পাশ থেকে বন্ধুরা দেখে হই হই করে উঠল – “আরে পচা, মেয়েটাকে চোখ মারছিস্?” পচা অনন্যোপায় হয়ে ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ল।
দিন যায় দিন আসে। পচা ভেবেই কুল পায় না – কী করে তার ভালবাসার মানুষটির সঙ্গে আলাপ করবে। একদিন একটা বুদ্ধি এসে গেল মনে। মেয়েরা তো বিকেলবেলা সাজগোজ করে। নিশ্চয়ই সে-ও সেজেগুজে জানালার ধারে বসে থাকবে। এমনটা ভেবে খোঁজ করে করে পচা চলে এল একেবারে ফুলকুমারীর বাড়ির জানালার কাছে। জানালার পর্দাটা আলতো করে সরিয়ে দ্যাখে – যা ভেবেছিল ঠিক তাই। ফুলকুমারী এক মনে সাজগোজ করছে। “আ! কী সুন্দর। যেন ভরা পূর্ণিমার জ্যোৎস্নার মতো রূপ ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু ডাকবো কী করে? বাড়ির লোকেরা যদি শুনে ফেলে। তারপর ধরে ফেলে দেবে গণধোলাই। না বাবা, কাজ নেই। ফুলকুমারীও আমাকে ঘৃণা করবে।” এমনটা ভেবেই পকেট থেকে কলম আর এক টুকরো কাগজ বের করল। লিখল কবিতার ছন্দে,
“এসেছিলাম তোমার দ্বারে,

তবু সাহস হয়নি মনে।

নিভৃতে রইল বাসনা হৃদয়-গৃহে,

সাধ পূর্ণ হবে শুভ লগ্ন এলে ।

আজ দু’চোখে তোমার কী রূপ দেখলাম!

লোভের বসে সেই রূপ চুরি করে নিলাম ৷ ”
ব্যাস, টুকরোটা পুলটিস করে পর্দাটা আবার আলতো করে এমনভাবে সরালো যাতে ওপাশ থেকে চোখ দুটোই শুধু দেখা যায় ৷ তারপর হাত গলিয়ে পুলটিসটা এমনভাবে মেপে ছুঁড়ে মারল পচা, একেবারে গিয়ে পড়ল ফুলকুমারীর সামনে। মুহূর্তে চোখে চোখ পড়তেই ফুলকুমারী চেঁচিয়ে উঠল, “কে,কে ওখানে ?” পচা মরিবাঁচি করে দিল ছুট। ফুলকুমারীর চিৎকার থামে না – “মা, বাবা এদিকে এসো। চোর, চোর। আমাকে চোখ মেরে পালিয়ে যাচ্ছে।” চিরকুটটা খুলে তাড়াতাড়ি পড়েও নিল। মা আসার আগেই বাবা এক দৌড়ে ছুটে এসে জিজ্ঞেস করল, “কী হয়েছে রে মা ?” ফুল চিরকুটটা দিয়ে বলল, “এই দ্যাখো, চোর আমার রূপ চুরি করে নিয়ে গেছে।”

থানায় নালিশ গেল। অফিসার এক গাল হেসে বলল, “ধুর বোকা, হেয়ালি করছো নাকি ? রূপ আবার কেউ চুরি করতে পারে ?” “পারে, অফিসার পারে। এই তো তার প্রমাণ।” চিরকুটটা পড়ে অফিসার এবার গম্ভীর হয়ে বলল, “তাইতো, তোমার মেয়ের রূপ তাহলে সত্যিই চুরি গেছে। যাই তাহলে, সে ব্যাটাকে ধরে নিয়ে আসি,” এই বলে অফিসার বেরিয়ে পড়ল।
কিছুদিন পর ফুলকুমারী একদিন কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছে। পচাও পেছন পেছন আসছে। আজ প্রতিজ্ঞা করেছে – কথা বলবেই। পেছনে কেউ আসছে মনে হওয়ায় ফুলকুমারী একবার-দু’বার পেছন ঘুরে তাকালো। পচাও নিজেকে লুকোতে পেছন ঘুরে দাঁড়িয়ে পড়ল। নার্ভ দুর্বল ছেলেটার হাত-পা কাঁপতে লাগল। “নাঃ আজও কথা বলা হল না।” পকেট থেকে সেই চিরকুট, কলম বের করে চটজলদি লিখে ফেলল,
“পারিনা সইতে মনের এ ভীষণ জ্বালা,

জুড়াইলো তবু পরেছো যে গলায় কী অপরূপ মালা!

থাক্, নাইবা পরালে ডেকে,

তোমার মনের মালা আমি করলাম চুরি বিরহ মনে ।”
চিরকুটটা আগের মতোই পুলটিস করে পেছন থেকে ফুলকুমারীর সামনে ছুঁড়ে দিয়ে দ্রুত পেছন ঘুরে পচা কলেজের দিকে হাঁটতে লাগল। পচাকে পাশ কাটিয়ে কতগুলো ছেলে এসে পড়ায় ফুলকুমারী কিচ্ছুটি বুঝতে পারল না। বাড়ি ফিরে মালাটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বাবাকে পুলটিসটা ধরিয়ে দিল, তারপর কাঁদতে কাঁদতে বলল, “আমার মালা চুরি গেছে বাবা।” বাবার দু’চোখ লাল হয়ে উঠল। থানায় গিয়ে একই নালিশ, “অফিসার, এবার আমার মেয়ের মালা চুরি করেছে। নিশ্চয় ঐ পাজি ছোকরাটাই হবে।” “আচ্ছা বলোতো, মালাটা সোনার না হীরের ?” “না অফিসার, কোনটাই নয়, পরেছিল পুঁতির মালা, কিন্তু চুরি গেছে মনের মালা।” “মনের মালা ? না না, যা ভেবেছিলাম তা ঠিক নয়৷ এই ব্যাটা সাংঘাতিক চোর। কিছুতেই ওকে হাতের নাগালে পাচ্ছি না। পেলে…..।” “হ্যাঁ, পেলে ওকে যাবজ্জীবন জেলের ভেতর ভরে রাখবেন,” বলে বাড়ি চলে এলো বাবা।

পচা এবার কৌশল বদলে ফেলল। তার মনে পড়ে গেল, সেদিন সে দেখে এসেছিল – ফুলকুমারী জানালার ধারে মোবাইল ফোনটা রাখে। হয়তো ঐ সময়ে রোজই রাখে। দিন কয়েক পরে বিকেলে পচা আবার এলো ফুলকুমারীর বাড়ির জানালার ধারে। ফোনটাও দেখতে পেল। হাত গলিয়ে ফোনটা পেয়েও গেল। মনে মনে বললো – নাম্বারটা জানা থাকলে চুরিটা করতে হত না। সেটিকে পকেটে পুরে সোজা গিয়ে বসল নির্জন নদীর ধারে। ফুলকুমারীর মোবাইলে বেশ সুন্দর করে নিজের সেল্ফি তুলে তার নিচে লিখল –
দূর থেকে যারে বাসো ভালো,

সে তোমার জীবনের আলো।

তবু বলো না কথা মুখ ফুটে,

আমি বৃথা ছুটি তোমার পিছে পিছে।

করেছি রূপ চুরি, মনের মালা চুরি, অপরাধ ভারি,

কলঙ্কের নেই ভয়, আমি যে তোমারি জীবনসাথী।

ইতি পচাদা
এবার ছবিসহ লেখাগুলো নিজের মোবাইলে এনে পুনরায় ফুলকুমারীর মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ করে পাঠিয়ে দিল, যাতে মোবাইল খুললেই ফুলকুমারী দেখতে পায়। কিন্তু মোবাইলটা সে এখন ফেরত দিয়ে আসবে কী করে? এতক্ষণতো ও বাড়িতে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে।
সত্যিই মোবাইলটা চুরি যাওয়ার জন্য ফুলকুমারী কেঁদে অস্থির। বাবা ছুটে গেছে থানায়। করজোড়ে অফিসারকে মিনতি জানায়, “ওসি সাহেব, মেয়ের এবার ফোন চুরি হয়েছে। ফোনটা উদ্ধার করে মেয়েকে দিতেই হবে।” “ঠিক আছে, ঠিক আছে, একটু শান্ত হও। আমরা লোকেশনটা দেখে নিই – সেটি এখন কোথায় আছে। তুমি বরং বাড়ি চলে যাও। ফোনটা উদ্ধার করে তোমার মেয়ের হাতে দিয়ে আসব, কথা দিলাম। আর ঐ ব্যাটা কত বড় চোর তাও দেখে নেব।”
এমন সময় অন্ধকার নেমে এসেছে পৃথিবীর উপর। পচা মোবাইলটা ঠিক জায়গায় পৌঁছে দিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছে। আনন্দ হচ্ছে, আবার ভয়ও ধরছে মনে। “ফুলকুমারী সত্যিই আমাকে ভালবাসেতো ? পুলিশকে যদি সব বলে দেয়, আমারতো যাবজ্জীবন জেল হবে।” ভাবতে ভাবতেই পচার ফোনটা বেজে উঠল। “দেখিতো কে ফোন করছে?” পচার মুখমণ্ডলে এবার হাসির ঝলক। “হ্যাঁঁ, এইতো ফুলকুমারী ফোন করেছে।” “হ্যালো পচাদা, তুমি এতসব করেছো? আর সবকিছু আমাকে ভালোবেসে করেছো? কিন্তু চুরি করার শাস্তি কী তুমি জানো?” পচার আনন্দে-বিহ্বল মুখটা নিমেষে মলিন হয়ে গেল। “শাস্তি! সত্যিই কি তুমি আমাকে শাস্তি দেবে?” “হ্যাঁ দেবো।” “কী শাস্তি?” “শাস্তিটা হল – সারাজীবন আমি আমার হৃদয়কে তোমার হৃদয়ে ঠাঁই দেবো। দেবো নয়, দিলাম।” এবার অপার আনন্দ পচার বুকে।
এদিকে কথামতোই ওসি এসে ঢুকল ফুলকুমারীর বাড়িতে। তার বাবাকে ডেকে বলল, “চোর ব্যাটা বড় ধুরন্ধর হে। তবে ধরা ও পড়বেই। আমরা ফোন ট্র্যাক করে জানতে পারলাম – বিকেল পাঁচটা পাঁচে ফোনের লোকেশান ছিল নদীর ধারে নির্জন একটি বেলতলা, আর সন্ধ্যা ছ’টা দশে এই স্পটে অর্থাৎ তোমার বাড়ি। তার মানে ফোনটা তোমার মেয়ে পেয়ে গেছে। বেশ, চলি তাহলে। আবার সমস্যা হলে জানাবে।”
ফুলকুমারীর বাবা-মায়ের আর দেরী সইছে না। দিনকাল যা পড়েছে – মেয়েকে আর ঘরে রাখতে চাইছে না। তড়িঘড়ি বিয়েটা দিয়ে দেবে। খোঁজাখুঁজি করে ভালো পাত্রের সন্ধানও পাওয়া গেল। পাশের গ্রামের নাড়ু গোপাল প্রামাণিকের ছেলে পাঁচুগোপাল। জ্যৈষ্ঠের তিন তারিখ বিয়ে। আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি। পাত্রপাত্রী কেউ কাউকে দেখেনি। মা-বাবার পছন্দেই বিয়ে। সুবোধ ছেলে পাঁচুগোপাল জীবনে কোনোদিন মা-বাবার প্রতি অবাধ্য হয়নি। সুন্দরী ফুলকুমারীর অবস্থাও একই।
কিন্তু বিয়ের দুদিন আগে পাত্রীর বাড়িতে ঘটে গেল নিদারুন ঘটনা। ফুলকুমারী বাড়ি থেকে উধাও। এ খবরটা পাত্রের বাড়িতে কেমন করে দেবে? ওদিকে পাত্রের বাড়িতেও একই দুশ্চিন্তা।

হরিচরণ ছুটে গেল থানায়। বলল, “ওসি সাহেব, সর্বনাশ হয়ে গেছে। আমার বাড়ি থেকে ফুল চুরি হয়ে গেছে।” “এবার ফুল চুরি? তা কী কী ফুল ফুটেছে তোমার বাগানে? অনেক ফুল বুঝি? জানো, ফুল আমিও খুব ভালবাসি।” “সাহেব, সে ফুল নয়, আমার মেয়ের নাম ফুল, ফুলকুমারী।” “তাই বলো, এতদিন তো মেয়ের নাম ফুলকুমারী বলেই জানতাম। যাক্গে শোনো, মেয়েকে পেতে গেলে খবরের কাগজে ফটোসহ বিজ্ঞাপন দাও। বিজ্ঞাপনে লেখ – যে আমার মেয়েকে খুঁজে এনে দিতে পারবে তাকে পাঁচ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।” “পাঁচ লক্ষ টাকা!” “হ্যাঁ, এটুকু লাগবেই। আমি যতদূর জানি, তুমি একজন মহা কৃপণ লোক। বিয়েতেও এক পয়সা খরচা করছো না। আরে ছেলেকে যৌতুক দিলেও তো পাঁচ লাখ টাকা দিতে হত। মনে করবে তাই দিচ্ছো।” “ঠিক আছে, তাই হবে।”
খবরের কাগজে পরদিনই বিজ্ঞাপন বেরোল। পচা ফুলকে নিয়ে তখন শহরের এক হোটেলে। কিছু একটা কিনতে একটু বাইরে বেরিয়েছিল। পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারের কথাটা কানে এসে বাজল। চট করে একটা খবরের কাগজ কিনে নিয়ে বিজ্ঞাপনটা ভাল করে পড়ে নিল। তারপর দেরি না করে হোটেলে ফিরে এল। ভাবছে কত কিছু – “মানুষ লটারি কেটে পুরস্কার পায়, বন্ধুরা খেলাধূলা করে কত পুরস্কার পায়। আমি কোনোদিন কিচ্ছু পাইনি। চাকরিও পাবো না। বাবার ফুটপথের সেলুনে চুল-দাড়িই কামাতে হবে। যদি এই পুরস্কারটা পাই – সেলুনটা না হয় বড়ো করে, সুন্দর করে সাজিয়ে নেবো।”
পচা তখন বুঝিয়ে-সুজিয়ে, চালাকি করে বাড়ি ফেরার নাম করে ফুলকে নিয়ে সোজা থানায় এসে হাজির। পুলিশ তো ‘পচা চোর’কে চেনে না, তাই তার ভয়ও নেই। পুলিশও যথারীতি হরিচরণকে ফোন করে জানিয়ে দিল – তোমার মেয়ের খোঁজ পাওয়া গেছে। একটি ছেলে তাকে নিয়ে এসেছে। তুমি এক্ষুনি পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে এসো।”

হরিচরণ আর তার স্ত্রী মেয়েকে পাওয়ার আনন্দে টাকাটা নিয়ে দ্রুত চলে এলো থানায়। পচা রুমালে মুখ ঢেকে বসেছিল। ওসিও দেরি করলো না। হরিচরণের হাত থেকে টাকার বান্ডিলগুলো নিয়ে ছেলেটির হতে তুলে দিয়ে বললো – এই নাও, তোমার পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার। তোমাকে ধন্যবাদ, তুমি ওনার মেয়েকে খুঁজে নিরাপদে, স্বসম্মানে এনে দিয়েছো।”
হরিচরণ আবেগে আপ্লুত হয়ে ছেলেটিকে বললো – “বাবা, তুমি মহান,সুখী হও। তবে বাবা রুমাল্টা মুখ থেকে একটু সরাওতো। তোমার মুখখানা নয়ন ভরে দেখি।”
রুমাল সরাতেই হরিচরণের স্ত্রীর ভেতর ও বাইরে খুশির জোয়ার, “ওমা! এ তো আমাদের হবু জামাই নারায়ণপুরের নাড়ুগোপাল প্রামাণিকের ছেলে পাঁচুগোপাল।” সেই জোয়ারে ভেসে ওসিও বলে উঠল, “বেশ বুদ্ধিমান, যোগ্য জামাই হয়েছে। হরিচরণ, দেখলে তো, বুদ্ধির তারিফ করতে হয়। কৃপণ শশুরকে কেমন জব্দ করে ছাড়ল। নাপিতের ছেলে কিনা, ষোলো চোঙা বুদ্ধি ধরে পেটে। যাক্গে, তোমরা তোমাদের মেয়ে, জামাই দু’জনকে পেয়ে গেলে। কিন্তু আমরা যে এখনও পচা চোরের সন্ধান করতে পারলাম না।” ফুল হি হি করে হেসে বলে উঠল, “সে তো আপনার হাতের মুঠোতেই দারোগা সাহেব, এইতো সেই পচা চোর, আমার হবু বর পাঁচুগোপাল।” “অ্যা….!” ওসি, ফুলের বাবা-মা সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল পাঁচুর দিকে।